হতাশা থেকে মুক্তির ৫ টি অব্যর্থ টিপস জেনে নিন

আপনি কি আপনার জীবন নিয়ে হতাশায় ভুগছেন? তাহলে দেখে নিন কিভাবে হতাশা কাটাবেন এবং নিজের জীবনে অর্থ খুজবেন।

হতাশা থেকে মুক্তির ৫ টি অব্যর্থ টিপস জেনে নিন
হতাশা থেকে মুক্তির ৫ টি অব্যর্থ টিপস জেনে নিন


ব্যর্থতার মূল কারন হচ্ছে হতাশা। বর্তমান সময়ে মানবসমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মানুষ খুব সহজেই হতাশ হয়ে যায়। কারন হচ্ছে প্রযুক্তি মানুষকে একা করে দিয়েছে। এখন পরিবারের সবাই অথবা বন্ধুরা সবাই আড্ডা দেওয়ার পরিবর্তে আমরা স্যোশাল মিডিয়া, ইউটিউব, গুগল নিয়ে ব্যস্ত থাকি।


কিন্তু এটা ভার্চুয়াল জগৎ। এর বাইরে সবাই একা। অনেক সময় স্যোশাল মিডিয়ার অন্যদের শোঅফ করা পোস্ট দেখেও আমরা মন খারাপ করি। হতাশ হয়ে যাই, নিজেদের দুর্দশার জন্য। এছাড়া রয়েছে নিজেদের কাজের অসফলতার ভয়, খারাপ পরিস্থিতির ভয়, ভবিষ্যতে কোন বিপদের আশংকা, স্বাস্থ্যহানি, সম্পর্ক হারানোর ভয় ইত্যাদি থেকে চরম হতাশায় নিপতিত হয়ে থাকি আমরা।


এসব নিয়ে সারাদিন ভেবে আমরা চরম হতাশায় ডুবে যাই। মূলত হতাশা তখনই দেখা দেয় যখন আমাদের মনে হয় আমাদের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গেছে, এটা আর পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, বা আমরা যা ই করিনা কেন ভাগ্য আর বদলাবে না। হতাশা এত খারাপ একটি বিষয় যে, এটা ব্যক্তির আত্নবিশ্বাস পুরো নষ্ট করে দেয়। তার কর্মক্ষমতার উপর তার বিশ্বাস চলে যায়। কোনভাবেই আর নিজের প্রতি আস্থা থাকেনা। এ থেকে আত্নহত্যার প্রবনতা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।


আজ আমাদের পোস্ট সাজানো হয়ে হতাশা থেকে মুক্তির ৫ টি অব্যর্থ কৌশল নিয়ে। যা আপনাকে হতাশা থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই সাহায্য করবে। চলুন দেরী না করে আলোচনা শুরু করা যাক।


হতাশা থেকে মুক্তির ৫ টি অব্যর্থ টিপস:


১. বিপদের শেষ ফলাফল মেনে নিন

শিরোনাম পড়ে কি জটিল মনে হচ্ছে পাঠক? এটা খুবই সহজ। আপনি যদি কোন বিপদের আশংকা করে হতাশাগ্রস্থ হয়ে থাকেন,  তাহলে জেনে রাখুন কোন বিপদই মৃত্যুর অধিক নয়। তাই বিপদকে মেনে নিন। এরপর নতুন করে চিন্তা করুন, যেহেতু এখনো মারা যান নি, সেহেতু সবকিছুই আপনাকে চালিয়ে যেতে হবে। আর তাই আপনি আশা ছাড়তে পারেন না।


যাই ই ঘটুক না কেন, এরপর আবার নতুন করে শুরু করুন। সবসময় কোন কাজ শুরুর আগে এটা না করতে পারলে কি হবে তা ভেবে রাখুন। এবং বিকল্প ভেবে রাখুন। দেখবেন হতাশার মাত্রা কমে যাবে।


আরও পড়ুন: রিভিউ লেখার কাজ করে মাসে উপার্জন করুন ১০০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা ,দেখুন কিভাবে 


২. চিন্তা নয়, কাজ করুন

অনেকে কাজের চেয়ে বেশী চিন্তা করে থাকেন। মনে করুন আপনি চাকরির জন্য পড়ছেন, এই চাকরি পেলেই মনের মানুষটিকে বিয়ে করবেন। কিন্তু এর ভিতর না পড়ে আপনি ভাবছেন, চাকরিটা হবে কিনা, এর ভিতর সে আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে কিনা।


সত্য কথা এই যে, চাকরি পাবেন কিনা তা আপনার প্রস্তুতির উপর নির্ভর করছে। আর প্রস্তুতি ভাল না হলে চাকরি হবেনা। আর এর আগে প্রিয়জন চলে গেলে আপনার জন্য যদি চাকরিই শর্ত হয় তাকে পাবার, তাহলে তা আটকাতে পারবেন না। তাই এক্ষেত্রে ধৈর্য ধরে নিজের কাজটি করুন।


চিন্তা করে বসে থাকলে কোন কাজই হবেনা। তাই কাজ করুন, যা ঘটার সেটা ঘটবেই। এই মনোভাবটাই হতাশা দূর করে দেবে।


৩. অন্যের কথায় গুরুত্ব দেবেন না

যারা আপনার সবকাজেই সন্দেহ প্রকাশ করে, যে পারবেন কিনা, অথবা আপনাকে দিয়ে হবে না। এরকম মানুষ তারা যতই আপন হোক ন কেন, তাদের কথা অগ্রাহ্য করুন। মানুষ পারেনা এমন কোন কাজ নেই। আপনি আমি যখন ইউটিউবে মুভি দেখছি, পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে কেউ তখন নতুন গবেষনায় ব্যস্ত, যা আবিষ্কার হলে পৃথিবী বদলে যাবে।


আপনিও মানুষ, নিজেকে সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারলে আপনিও যেকোন কিছু করতে পারবেন।বিশ্বাস রাখুন নিজের প্রতি। অন্যরা যদি বলে পারবেন না, সেটা না শোনার ভান করুন। সময়ই আপনার হয়ে জবাব দেবে। 


আরও পড়ুন: অনলাইন পন্যের বিক্রয় বাড়ানোর ৫ টি অব্যর্থ কৌশল


৪. অন্যের সাথে নিজের তুলনা করবেন না

বেশীরভাগ মানুষের অসুখী হওয়ার মূল কারন অন্যের সাথে নিজের তুলনা করা। নিজের যতই থাক, তবু অন্য কারো সাথে নিজেকে তুলনা করে নিজেকে অসুখী ভেবে অনেক মানুষ হতাশার ভিতর দিন কাটাচ্ছে। আপনি যেমন তা থেকে ভাল কিছু পেতে চাইলে আপনাকে নিজে চেষ্টা করতে হবে। অন্যদের চেয়ে আরও বেশী চেষ্টা করতে হবে। তারপরেই আপনি অন্যদের চেয়ে বেশী সফল হবেন।


কিন্তু যদি তা না করে শুধু ঈর্ষা করেন তাহলে শুধু হতাশায় ভুগবেন, কিন্তু পরিত্রানের উপায় পাবেন না। মনে রাখুন অন্যকেউ ভাল আছে কারন সে আপনার চেয়ে বেশী পরিশ্রম করছে। তাই আপনি তুলনা করে, হতাশাগ্রস্থ না হয়ে পরিশ্রম বাড়িয়ে দিন।


৫. অসুখী মানুষদের সাথে সময় কাটান

এটা হচ্ছে হতাশা কাটানোর অব্যর্থ উপায়। আপনি যখন আপনার মত, অথবা আপনার চেয়ে বেশী কষ্টে থাকা মানুষ দেখবেন তখন নিজের কষ্টের কথা ভুলে যাবেন। তাদের জীবন যাপন, হতাশা, ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের জীবনে ঘুরে দাড়ানোর শক্তি পাবেন।


সবসময় এমন কারো সাথে বন্ধুত্ব করুন যে আপনার মত। তাহলে আপনি অনেক সাপোর্ট পাবেন। নিজেকে একা মনে হবেনা। শুধুমাত্র সময় কাটানোর মত মানুষ, আর ভরসা দেওয়ার জন্য পাশে কেউ থাকলে মানুষের হতাশার মাত্রা অনেক কমে আসবে। তাই নিজের মনোভাবের কারো সাথে বন্ধুত্ব করুন। হতাশা থেকে মুক্তি পাবেন।


আরও পড়ুন: আকর্ষণীয় ফেসবুক প্রোফাইল তৈরি করতে চান? দেখে নিন সম্পূর্ণ নির্দেশনা 


উপসংহার

জীবন একটাই, আর আমরা এখানে অল্প সময়ের অতিথি। এরমধ্যেই নিজেদের কাজ সম্পন্ন করতে হবে আমাদের। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে আমরা সবাই জানি যে মৃত্যু যেকোন সময় আসবে, তবুও আমরা পাওয়া, না পাওয়া সবকিছু নিয়ে বড় বেশী চিন্তিত। আমরা একটা সম্পর্ক না থাকলে কি হবে সেটা ভেবে নিজেদের হতাশার সাগরে ডুবিয়ে দেই। অথচ এটা ভাবি না যে, আমরা কাল নাও থাকতে পারি৷ জীবন জটিল না করতে চাইলে উপরিউক্ত কৌশলগুলো অনুসরন করুন, দেখবেন হতাশা থেকে মুক্তি পাবেন।


আশা করি হতাশা থেকে মুক্তি পেতে পোস্টটি আপনার উপকারে আসবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে  বা কোন মতামত দেওয়ার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। আমরা আপনার মতামত গুরুত্বসহকারে নিয়ে অবশ্যই দ্রুত উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আজকের মত এখানেই শেষ করছি। 

ধন্যবাদ সবাইকে।