প্রাকৃতিক উপায়ে মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করুন

পার্লারে গিয়ে আপার লিপ বা ত্বকের অবাঞ্চিত লোম দূর করার থেকে কয়েকটি উপাদান দিয়ে তৈরি ঘরোয়া ব্লিচ করেই ত্বকের অবাঞ্চিত লোম থেকে মুক্তি পান। কীভাবে? আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

প্রাকৃতিক উপায়ে মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করুন
প্রাকৃতিক উপায়ে মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করুন


মুখের অবাঞ্ছিত লোম কোন নারী পছন্দ করে থাকেন না। তাদের ধারণা মুখে অবাঞ্ছিত লোমের কারণে তাদের দেখতে অসুন্দর দেখায় কিংবা সেটা তাদের চেহারার সাথে মানানসই না। অনেকে ভেবে থাকেন নারীদের মুখমন্ডল হওয়া উচিত কোমল নমনীয়।


এখানে অবাঞ্ছিত লোম থাকা মানেই সেটা মুখের সাথে একেবারেই যায় না। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই জিনিসগুলো প্রকৃতি থেকে দেওয়া। সুতরাং প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত জিনিসগুলো কখনো অসুন্দর হতে পারে না এই ধারনা যত দ্রুত সম্ভব মাথায় আয়ত্ত করে ফেলা উচিত। 


কিন্তু অনেকেই এই বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারে না এবং নানাভাবে মুখের অবাঞ্ছিত লোম তুলে ফেলার চেষ্টা করে। বিভিন্ন পার্লারে গিয়ে ব্লিচ করে অথবা রেজার এর মাধ্যমে আপার লিপ করে নারীরা এই ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম তুলে ফেলেন।


কিন্তু এখানেই বিপত্তিটা ঘটে। দেখা যায় যে, একেবারে গোড়া থেকে এই লোম গুলো পরিষ্কার না করার কারণে লোমগুলো দ্রুত এবং দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে ও প্রচুর ঘন হয়ে যায়। সত্যিকার অর্থে তখন নারীদেরকে দেখতে খুব একটা ভালো লাগে না।


কেননা গোফ পুরুষের বৈশিষ্ট্য। একটা পর্যায়ে গিয়ে নারীরা তাদের আপার লিপ বারবার পরিষ্কার করতে করতে একসময় দেখা যায় পুরুষের মতো গোঁফ গজিয়ে ফেলেছে। যা প্রকৃতপক্ষে ঠিক নয়। আর এ কারণে প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করা যায় সেটা নিয়ে৷


আজকের আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হবে। তাহলে দেরি না করে চলুন আমরা আর্টিকেলটির মূল বিষয় প্রবেশ করে ফেলি। 


আরও পড়ুনঃ চুল পড়া রোধ করতে কলার ব্যবহার


প্রথমে একটা বিষয় পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো এবং সেটি হচ্ছে যখন আপনি কোন অংশের চুল বারবার আগা থেকে কাটতে থাকবেন সেটি ততো দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাবে। গ্রামেগঞ্জে এমনকি শহরের সংস্কৃতিতেও এই বিষয়টি দেখা যায় যে নবজাতকের জন্ম হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার তার মাথার চুল ফেলে দেওয়া হয়। এর কারণ হচ্ছে যত মাথার চুল ফেলে দেওয়া হবে ততো চুল ঘন হয়ে উঠবে।


এই প্রাকৃতিক ঘটনাটি শরীরের সমস্ত ত্বকের চুলের সাথে ঘটে থাকে। চুলের আগা থেকে যত একে কাটা হবে ততই এটি ঘন হয়ে গজিয়ে উঠবে। তাই এ ধরনের চুল তথা অবাঞ্ছিত লোম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য চুলকে একেবারে গোড়া থেকে তুলে আনতে হবে।


আপার লিপ এর ক্ষেত্রে যদি অবাঞ্ছিত লোম গুলো একদম গোড়া থেকে তুলে ফেলা সম্ভব হয় তবে আর বারবার অবাঞ্ছিত লোম যে রকম ঘটবে না, ঠিক সেরকমই লোম ঘন হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। 


প্রাকৃতিক ভাবে কিভাবে এই অবাঞ্চিত লোম গুলো দূর করা সম্ভব?

সাধারণত আপার লিপ দূর করার জন্য ঘরোয়া পদ্ধতিতে অনেক রকম উপকরণ একসাথে মিশিয়ে আঠালো পদার্থ তৈরি করে সেটা দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।


আজকের আর্টিকেলটিতে এরকমই দুইটি উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হবে যা ব্যবহার করে আপনারা আপনাদের ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম এবং আপার লিপ থেকে রক্ষা পেতে পারবেন। তাহলে চলুন দেরী না করে জেনে নিও পদ্ধতি গুলো। 


আরও পড়ুনঃ গরমে ত্বকের যত্নের পরিপূর্ন টিপস জেনে নিন



পদ্ধতি নং ১

এই পদ্ধতিতে আপনার অবাঞ্ছিত লোম খুব দ্রুত উঠে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে যেটা করতে হবে, একটি পরিষ্কার পাত্রে 2 টেবিল চামচ চিনি ও একটি লেবুর রস নিতে হবে। অতঃপর এতে আট থেকে নয় চামচ জল একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।


মিশ্রণটি ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে একে গরম করুন যতক্ষণ না মিশ্রণটি টগবগ করে ফুটে উঠছে। যখনই দেখবেন মিশ্রণটি ফুটে উঠেছে এবং হালকা বাদামি বর্ণ ধারণ করেছে তখন একে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। ঠান্ডা ও তরল থাকা অবস্থায় এই মিশ্রণটি আপনার অবাঞ্ছিত লোম তথা আপার লিপে ভালো করে লাগিয়ে নিন এবং 20 থেকে 25 মিনিট সময় নিন শুকানোর জন্য।


একবার এই মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে এটি আপনার ত্বকের সাথে ভালোভাবে লেগে যাবে। এরপর একটা টান দিয়ে উক্ত শুকিয়ে যাওয়া মাস্কটি তুলে ফেলুন। দেখবেন আপনার আপার লিপের সকল অবাঞ্ছিত লোম গুলো আঠালো পদার্থটিতে লেগে একেবারে গোড়া থেকে উঠে এসেছে। 


এখানে বলে রাখা ভালো, এই মিশ্রণটিতে ব্যবহার করা লেবু প্রাকৃতিক ব্লিচ এর কাজ করেছিল আর গরম চিনি মূলত আঠালো ভাবটা এনেছিল। আর এ কারণে যখন একে ত্বকের অবাঞ্ছিত লোম তুলে ফেলার জন্য ব্যবহার করা হয় তখন খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। 


আরও পড়ুনঃ চুলের যত্নে ডিমের দারুন কিছু ব্যবহার ও প্যাক




পদ্ধতি নং ২

এই পদ্ধতিটি অনেক সহজ। এখানে আপনাকে প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্র নিতে হবে। অতঃপর উক্ত পাত্রে এক টেবিল চামচ কর্ণস্টার্চ ও চিনির সাথে ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করতে হবে।


সকল উপকরণ ভালোভাবে একসাথে মিশিয়ে নিয়ে মুখের অবাঞ্ছিত লোমের অংশে সম্পূর্ণ মিশ্রণটি ব্যবহার করতে হবে।


মিশ্রণটি মুখে লাগানোর পর যখন দেখবেন এই মিশ্রণটি শুকিয়ে গিয়েছে তখন একটি ধুয়ে ফেলুন। টানা কয়েক দিন ব্যবহার করতে থাকলে দেখবেন ধীরে ধীরে আপনার অবাঞ্ছিত লোম কম হয়েছে। 



সুপ্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি আজ এখানেই শেষ হচ্ছে। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।